
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর জন্মবার্ষিকীতে ডুয়েটে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী উদযাপন
যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত হয়েছে। আজ (১৭ মার্চ) শুক্রবার বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সকাল ৬.১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, লাইব্রেরি ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচী শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দেয়ালে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ও পরে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালিত হয়। এছাড়া এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন/ শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’-কে সামনে রেখে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর জীবন ও কর্মের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান বলেন, মার্চ মাস বাঙালি জাতির জীবনে একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ মাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসের এইদিনে পৃথিবীতে পদার্পণ করেন। একই সঙ্গে মার্চ মাস বাঙালির স্বাধীনতার মাস। বঙ্গবন্ধুর মতো মহানায়কের জন্মবার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণ বাঙালি জাতির জন্য পরম পাওয়া। বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালির মৃত্যুঞ্জয়ী চেতনা। বঙ্গবন্ধু মানেই সাম্য-অধিকার-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। বঙ্গবন্ধু মানেই দেশের জনগণের প্রতি, মানুষের প্রতি ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালির দিশা- আলোর দিশারী। বঙ্গবন্ধু মানেই তো বাংলাদেশ, স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনাকালে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিয়ে বেশি বেশি বইপড়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসচর্চা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনে দীক্ষিত হতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন।
উপাচার্য জাতীয় শিশু দিবসের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তিনি সবসময় শিশুদের দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠবার অনুপ্রেরণা যোগাতেন। তিনি শিশুদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ যাবতীয় মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ও মেধা বিকাশের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন। তিনি জানতেন আজকের শিশুরা আগামীদিনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানান। এছাড়া তিনি ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের তাৎপর্য তুলে ধরে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য সবাইকে শপথ নেওয়ার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিলো ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর রচনা প্রতিযোগিতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও গবেষণা দর্শন’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। পরে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ঘটনা বহুল জীবনের উপর চিত্র প্রদর্শনী এবং তাঁর জীবন ও দর্শনের উপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী হয়।