ডুয়েটে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রাপ্তির পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়। ঐতিহাসিক এই দিনটির পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে
ঐতিহাসিক এই দিনটি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার দুপুরে (২৩ মে, ২০২৩ খ্রি.) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দেয়ালে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আহ্সান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রনেতার প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অসামান্য অবদান রাখায় বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে আনুষ্ঠনিকভাবে এই পদক দেওয়া হয়েছিলো। মর্যাদপূর্ণ এ পুরস্কার প্রাপ্তির পর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এ সম্মান কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের। ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক সমগ্র বাঙালি জাতির।’
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সংবিধানে গ্রহণ করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংঘাতময় পরিস্থিতি উত্তরণে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের ফলে আন্তর্জাাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের গৌরব ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ছিল স্পষ্ট। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরাজিত সব সমস্যার শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরাধ্য এবং এখানেই তাঁর রাজনৈতিক চেতনার মাহাত্ম্য। এ কারণেই ওই বছর এশীয় শান্তি সম্মেলনে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দিতে গিয়ে তৎকালীন পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল রমেশচন্দ্র বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনের ভিত্তিতে শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে চলেছে
বক্তব্যে উপাচার্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চার জন্য সকলকে আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নকে জনমুখী ও টেকসই করতে সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনে দীক্ষিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশবত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়া তিনি ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা-বোনসহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান্ব
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিপীড়িত, নিষ্পেষিত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে শান্তির সপক্ষে অবদান রেখেছেন। ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তি তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, রেজিস্ট্রার (অ. দা.), অফিস প্রধানগণসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।