ডুয়েটে আন্তর্জাতিক নারী দিবস- ২০২৫ উদযাপন
ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ 'অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন/ নারী ও কন্যার উন্নয়ন' এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস- ২০২৫ উদ্যাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে শনিবার সকালে একটি র্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে নারী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারী দিবসের এসব আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের পত্নী জনাব আফরোজা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসারের পত্নী জনাব কানিজ ফাতেমা বাণী।
আলোচনা সভার প্রধান অতিথি জনাব আফরোজা বেগম বলেন, ‘সভ্যতার গোড়াপত্তনে ও বাঁকে বাঁকে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সম্প্রতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখ সারিতে থেকে নারীরা জোড়ালো ভূমিকা পালন করেছেন এবং নিহত ও আহত হয়েছেন।’ এ সময় তিনি সকল নারী শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের পূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের এত ত্যাগ ও অবদানের পরও তাঁদের সন্মান, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিনিয়ত ক্ষুন্ন হচ্ছে। এখনো নারীরা গৃহে নিযার্তনের শিকার হচ্ছে, সম্পদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা আমাদের হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত করেছে।’ তিনি নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন এবং নিরাপত্তা জন্য আইন সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে নারীর সন্মান, মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দৃঢ় ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
বিশেষ অতিথি জনাব কানিজ ফাতেমা বাণী বলেন, ‘নারী ছাড়া পরিবার, সমাজ অচল। তবুও নারীদের অধিকারের জন্য নারী দিবস পালন করতে হয়। নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়নের জন্য আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও পুরুষের মানসিকতার উন্নয়ন ঘটানো দরকার। তবেই নারীরা স্বংয়ক্রিয়ভাবে অধিকার, সমতা, সন্মান ও মর্যাদা পাবে। তিনি নারীদের নিরাপদ জীবন ও নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। একজন পুরুষের সফলতার সঙ্গে নারীর সফলতা অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়নে আমরা অঙ্গিকারারবদ্ধ। ইতোমধ্যে আমাদের বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের জন্য একাডেমিক ও কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে সকল ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ তিনি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি ও মাদামকুরী হল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার বলেন, ‘শুধু নারী দিবসই নয়, প্রতিদিনই আমরা নারীর অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়নের বিষয়ে সর্বোচ্চ সচেতন থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ তাদের অধিকার ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ডুয়েটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি ও মাদামকুরী হলের আয়োজনে এবং উক্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোছা. নাসরিন আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. উম্মে রায়হান, মাদামকুরী হলের প্রভোস্ট ও ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমা, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনিয়া নাসরিন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব সুমাইয়া কাজরী এবং মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ও অফিস প্রধান ডা. রাবেয়া নাসরিন আখন্দ। অনুষ্ঠানের সভাপতি মাননীয় উপাচার্য, মাননীয় উপ-উপাচার্য, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দসহ সকলকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।